Menu |||

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি

বাংলাদেশে প্রচলিত প্রায় দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম নেই। উক্ত তালিকায় স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, সেনাপ্রধান এম.এ.জি ওসমানী, ত্রিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনের নামও নেই। তবে তারা কি মুক্তিযোদ্ধা নন? মুক্তিযুদ্ধের প্রাণ-পুরুষ, স্থপতি ও সর্বাধিনায়ক বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা নন; তা কি ঠিক? বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যার চেয়ে বড় মুক্তিযোদ্ধা কারা? তারা কি জাতীয় চার নেতা? তারাও তো মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত নন। আর লাখো শহীদ ও সম্ভ্রমহারা মা-বোন তো শুধু মুখে মুখেই। বাংলাদেশে তাদের পরিবার-পরিজন বলতে কিছুই নেই। তবে কারা দেশ মুক্ত করেছেন? মুক্তিযুদ্ধ কি ১৯৭১ এর ২৬ শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বরেই সীমাবদ্ধ ছিল? এসময় বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা উভয়ে পাকবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। তারপরও বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার স্থপতি ও বাঙ্গালি জাতির জনক। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধা তালিকার বাইরে। তবে স্বাধীনতাযুদ্ধে তার কি কোনো অবদান নেই? শুধু দুই লাখ কোটাধারী ব্যক্তিই কি দেশ স্বাধীন করেছেন? অন্য সবাই কি অমুক্তিযোদ্ধা? এভাবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যা ও বৈষম্যের ইতিহাস রচিত হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস বিশ্লেষণে সুস্পষ্ট হয় যে, বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা। অতএব, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি সঠিক নয় কি?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম সন্তান হিসেবে জন্মলাভ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১-এ চলমান স্বাধীকার আন্দোলনে তিনি বঙ্গবন্ধুকে অপরিসীম অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, যা আমাদের স্বাধীনতার পথ সুগম করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সংকলিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও মঈদুল হাসানের ‘মূলধারা ৭১’ সহ অসংখ্য গ্রন্থে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। স্বাধীকার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু অসংখ্যবার কারান্তরিন হয়েছেন। দেশনেত্রী তার মা ও আত্মীয়-স্বজনসহ বঙ্গবন্ধুর সাথে জেলখানায় সাক্ষাত করেছেন, তাকে আশ্বস্থ করেছেন এবং আবেগাপ্লুত হৃদয়ে সমবেদনা প্রকাশ করে রক্ত¯œাত সংগ্রামের পথে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি ছিলেন পিতার মতোই স্বাধীনতা মন্ত্রে উজ্জীবিত কঠিন শিলা মানবী। তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ইন্টারমিডিয়েট থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গার্লস কলেজে পড়ার সময়ে ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ও রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও ছয়দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধে নারী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন।
১৯৬৮ সালে পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিয়ে হলেও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কঠিন দিনগুলোতে স্বামীসহ দেশেই ছিলেন। ১৯৭১ এর ২৭ জুলাই প্রথম সন্তান ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’-এর মা হন। তখন আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফলে পাকবাহিনীর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বঙ্গবন্ধুর মতোই গৃহবন্দি হন। পরে মুক্তিবাহিনীর অভিযানে রক্ষা পান। তিনি বন্দি থাকলেও ছিলেন সংগ্রামী ও তেজোদীপ্ত। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসামান্য।
স্বাধীনতার পর তিনি দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় স্বামীসহ বিদেশে যান। ঘাতকেরা নিষ্ঠুরভাবে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যাকালে তিনি ছোটবোন শেখ রেহানাসহ পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের’ হাল ধরেন। তার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ এখন স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করছে। তিনি বাংলাদেশের ভাগ্যন্নয়নের সত্যিকার দিকপাল ও যোগ্য বীর। স্বাধীকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত দেশের প্রতি প্রদত্ত অবদান মূল্যায়নে তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা একমাত্র বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কে আছেন?
স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান অস্বীকার করা মানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা। অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীসহ অন্যরা যেসময় বাম দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে সবাইকে স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য সুসংগঠিত করেছেন। অতএব, স্বাধীনতার চেতনা তার চেয়ে বেশি ধারণ করেন কে? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তার চেয়ে অগ্রগামীই বা কে? এমনকি খেতাবধারী ও তালিকাভুক্ত যোদ্ধা কেউ কি আছেন, যিনি বঙ্গবন্ধু কন্যার চেয়ে নিজেকে বড় মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন? সুতরাং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবিতে বিলম্ব কেন?
বাংলাদেশে এখন মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা বিতর্ক চরমে উঠেছে। মাত্র প্রায় দুই লাখ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবার ত্রিশভাগ কোটাসুবিধা পাচ্ছে। তাদের ভাতা বেড়েছে। তাদের সন্তান-সন্ততি ও নাতি-নাতনিরাও চাকুরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ সকল ক্ষেত্রে কোটা পাচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের ষোল কোটি নাগরিক অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা যথেষ্ট যোগ্যতা সত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের কাছে হার মানছে। এ বৈষম্য ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে বড় বাধা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা সংগ্রামী দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হলে সকল বিতর্ক, বৈষম্য ও বাধা দূর হবে। বাংলাদেশের ষোল কোটি নাগরিক বঙ্গবন্ধু ও লাখো শহীদের সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ জাতিরূপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দৃঢ় শপথ নিবে।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী
কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে
সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে
মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার
কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
নতুন উপদেষ্টাদের নিয়ে জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখবো’
জীবিত স্বামীকে গণ–অভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্তরায়: সম্পাদক পরিষদ
দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকর: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী

» কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে

» সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে

» ফারুকীর পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়

» পাকিস্তান থেকে সেই আলোচিত জাহাজে যা যা এল

» মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার

» কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

» ক্ষমা না চাইলে নুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়

» বাকু থেকে ফিরলেন ড. মুহাম্মাদ ইউনূস

» শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
,

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি

বাংলাদেশে প্রচলিত প্রায় দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম নেই। উক্ত তালিকায় স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, সেনাপ্রধান এম.এ.জি ওসমানী, ত্রিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনের নামও নেই। তবে তারা কি মুক্তিযোদ্ধা নন? মুক্তিযুদ্ধের প্রাণ-পুরুষ, স্থপতি ও সর্বাধিনায়ক বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা নন; তা কি ঠিক? বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যার চেয়ে বড় মুক্তিযোদ্ধা কারা? তারা কি জাতীয় চার নেতা? তারাও তো মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত নন। আর লাখো শহীদ ও সম্ভ্রমহারা মা-বোন তো শুধু মুখে মুখেই। বাংলাদেশে তাদের পরিবার-পরিজন বলতে কিছুই নেই। তবে কারা দেশ মুক্ত করেছেন? মুক্তিযুদ্ধ কি ১৯৭১ এর ২৬ শে মার্চ থেকে ১৬ই ডিসেম্বরেই সীমাবদ্ধ ছিল? এসময় বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা উভয়ে পাকবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। তারপরও বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার স্থপতি ও বাঙ্গালি জাতির জনক। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধা তালিকার বাইরে। তবে স্বাধীনতাযুদ্ধে তার কি কোনো অবদান নেই? শুধু দুই লাখ কোটাধারী ব্যক্তিই কি দেশ স্বাধীন করেছেন? অন্য সবাই কি অমুক্তিযোদ্ধা? এভাবে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মিথ্যা ও বৈষম্যের ইতিহাস রচিত হয়েছে। প্রকৃত ইতিহাস বিশ্লেষণে সুস্পষ্ট হয় যে, বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধা। অতএব, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি সঠিক নয় কি?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম সন্তান হিসেবে জন্মলাভ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১-এ চলমান স্বাধীকার আন্দোলনে তিনি বঙ্গবন্ধুকে অপরিসীম অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন, যা আমাদের স্বাধীনতার পথ সুগম করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সংকলিত ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও মঈদুল হাসানের ‘মূলধারা ৭১’ সহ অসংখ্য গ্রন্থে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। স্বাধীকার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু অসংখ্যবার কারান্তরিন হয়েছেন। দেশনেত্রী তার মা ও আত্মীয়-স্বজনসহ বঙ্গবন্ধুর সাথে জেলখানায় সাক্ষাত করেছেন, তাকে আশ্বস্থ করেছেন এবং আবেগাপ্লুত হৃদয়ে সমবেদনা প্রকাশ করে রক্ত¯œাত সংগ্রামের পথে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি ছিলেন পিতার মতোই স্বাধীনতা মন্ত্রে উজ্জীবিত কঠিন শিলা মানবী। তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ইন্টারমিডিয়েট থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। গার্লস কলেজে পড়ার সময়ে ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য ও রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও ছয়দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধে নারী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন।
১৯৬৮ সালে পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিয়ে হলেও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের কঠিন দিনগুলোতে স্বামীসহ দেশেই ছিলেন। ১৯৭১ এর ২৭ জুলাই প্রথম সন্তান ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’-এর মা হন। তখন আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ফলে পাকবাহিনীর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যান। মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে বঙ্গবন্ধুর মতোই গৃহবন্দি হন। পরে মুক্তিবাহিনীর অভিযানে রক্ষা পান। তিনি বন্দি থাকলেও ছিলেন সংগ্রামী ও তেজোদীপ্ত। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসামান্য।
স্বাধীনতার পর তিনি দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় স্বামীসহ বিদেশে যান। ঘাতকেরা নিষ্ঠুরভাবে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যাকালে তিনি ছোটবোন শেখ রেহানাসহ পশ্চিম জার্মানিতে ছিলেন। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের’ হাল ধরেন। তার সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ এখন স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ উপভোগ করছে। তিনি বাংলাদেশের ভাগ্যন্নয়নের সত্যিকার দিকপাল ও যোগ্য বীর। স্বাধীকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত দেশের প্রতি প্রদত্ত অবদান মূল্যায়নে তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা একমাত্র বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কে আছেন?
স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান অস্বীকার করা মানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা। অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরীসহ অন্যরা যেসময় বাম দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে সবাইকে স্বাধীনতাযুদ্ধের জন্য সুসংগঠিত করেছেন। অতএব, স্বাধীনতার চেতনা তার চেয়ে বেশি ধারণ করেন কে? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তার চেয়ে অগ্রগামীই বা কে? এমনকি খেতাবধারী ও তালিকাভুক্ত যোদ্ধা কেউ কি আছেন, যিনি বঙ্গবন্ধু কন্যার চেয়ে নিজেকে বড় মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন? সুতরাং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তিযোদ্ধা দাবিতে বিলম্ব কেন?
বাংলাদেশে এখন মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা বিতর্ক চরমে উঠেছে। মাত্র প্রায় দুই লাখ তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবার ত্রিশভাগ কোটাসুবিধা পাচ্ছে। তাদের ভাতা বেড়েছে। তাদের সন্তান-সন্ততি ও নাতি-নাতনিরাও চাকুরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ সকল ক্ষেত্রে কোটা পাচ্ছে। অন্যদিকে, দেশের ষোল কোটি নাগরিক অমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা যথেষ্ট যোগ্যতা সত্ত্বেও মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের কাছে হার মানছে। এ বৈষম্য ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনে বড় বাধা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা সংগ্রামী দেশনেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হলে সকল বিতর্ক, বৈষম্য ও বাধা দূর হবে। বাংলাদেশের ষোল কোটি নাগরিক বঙ্গবন্ধু ও লাখো শহীদের সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা-অমুক্তিযোদ্ধা নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ জাতিরূপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দৃঢ় শপথ নিবে।

Facebook Comments Box

সাম্প্রতিক খবর:

তারেক মনোয়ার একজন স্পষ্ট মিথ্যাবাদী
কুয়েতে নতুন আইনে অবৈধ প্রবাসীদের কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে
সোশ্যাল প্লাটফর্মে লন্ডনী মেয়েদের বেলেল্লাপনা,চাম্পাবাত সবার শীর্ষে
মিছিল করায় আট মাস ধরে সৌদি কারাগারে ৯৩ প্রবাসী, দুশ্চিন্তায় পরিবার
কুয়েতে যুবলীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
শুক্রবার আহত ও শহীদদের স্মরণে কর্মসূচি দিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
নতুন উপদেষ্টাদের নিয়ে জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখবো’
জীবিত স্বামীকে গণ–অভ্যুত্থানে ‘মৃত’ দেখিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অন্তরায়: সম্পাদক পরিষদ
দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা বিব্রতকর: আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



Exchange Rate

Exchange Rate EUR: Thu, 21 Nov.

সর্বশেষ খবর



Agrodristi Media Group

Advertising,Publishing & Distribution Co.

Editor in chief & Agrodristi Media Group’s Director. AH Jubed
Legal adviser. Advocate Musharrof Hussain Setu (Supreme Court,Dhaka)
Editor in chief Health Affairs Dr. Farhana Mobin (Square Hospital, Dhaka)
Social Welfare Editor: Rukshana Islam (Runa)

Head Office

UN Commercial Complex. 1st Floor
Office No.13, Hawally. KUWAIT
Phone. 00965 65535272
Email. agrodristi@gmail.com / agrodristitv@gmail.com

Bangladesh Office

Director. Rumi Begum
Adviser. Advocate Koyes Ahmed
Desk Editor (Dhaka) Saiyedul Islam
44, Probal Housing (4th floor), Ring Road, Mohammadpur,
Dhaka-1207. Bangladesh
Contact: +8801733966556 /+8801316861577

Email Address

agrodristi@gmail.com, agrodristitv@gmail.com

Licence No.

MC- 00158/07      MC- 00032/13

Design & Devaloped BY Popular-IT.Com
error: দুঃখিত! অনুলিপি অনুমোদিত নয়।